শিশুর অতি চঞ্চলতা যখন দুশ্চিন্তার কারণ

 কথায় আছে ' দুরন্ত শৈশব '! শিশুরা দুরন্ত , স্বভাবে চঞ্চল , এটাই তো স্বাভাবিক। বাড়ীর খুদেরা দিনভর দৌড় ঝাপ, হুটোপুটি করবে , আধো আধো কথা আর হাসির কলতানে বাড়ী মাতিয়ে রাখবে - আমরা তো এমন টা দেখেই অভ্যস্ত। কিন্তু যদি কোনো কারণে আপনার বাড়ীর বাচ্চার এই  চঞ্চলতা হয় লাগামহীন , এবং  এই অতিচঞ্চলতা র কারণে যদি নিত্যদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটে চলে এবং সে চোট আঘাতের শিকার হতে থাকে। স্বভাবে যদি হয় সে প্রচন্ড ভুলো মন ও অমনোযোগী। পড়াশোনা, খেলাধূলা, নাচ-গান  সব জায়গাতেই মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয় , পড়াশোনায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে। সমবয়সী বন্ধুদের সাথে মেলা মেশা করতে অসুবিধা হয় , সময়ে সময়ে আচরণে হিংস্রতা দেখায় , তাহলে আর দেরী না করে ওকে একবার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। হয়তো সে এডিএইচডি (ADHD) র শিকার। অনেক ক্ষেত্রে আমরা শিশুমনের স্বাভাবিক চঞ্চলতা র সাথে এডিএইচডি র লক্ষণ গুলি  কে গুলিয়ে ফেলি। এখানে আমরা আলোচনা করবো, এডিএইচডি কি? এডিএইচডি রোগের কারণ এবং  এডিএইচডি র লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি ।


এডিএইচডি কি?


এডিএইচডি র পুরো নাম 'এটেনশন ডেফিসিট / হাইপার এক্টীভিটি ডিজঅর্ডার। এটি এক ধরণের স্নায়ু বিকাশ জনিত ( নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ) সমস্যা। এতে ছোটো বাচ্চাদের মধ্যে মনোযোগের প্রচন্ড অভাব , মানসিক অসংলগ্নতা ও আচরণে অতিরিক্ত চঞ্চলতা দেখা যায়। সাধারণত 3 থেকে 7 বছর বয়সী ছোটো শিশুদের মধ্যেই  এই রোগের লক্ষ্যণ গুলি প্রথম প্রকাশ পায়। সঠিক সময়ে রোগ শনাক্তকরণ ও উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে, অনেকের ক্ষেত্রে কিশোর অবস্থায়, এমন কি পরিণত বয়সেও এই রোগের লক্ষণ গুলি থেকে যেতে পারে। এই ধরণের নিউরো-সাইকিয়াট্রিক সমস্যায়, শৈশবেই উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয়, নতুবা ভবিষ্যতে এঞ্জাইটি ডিজঅর্ডার, সোশিয়াল ফবিয়া   ও ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে  যায় । আচরণ ও লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ADHD আক্রান্ত শিশুদের মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয় -
      1.ইনএটেন্টিভ  -  এই ধরণের বাচ্চারা ভীষণ রকমের অমনোযোগী হয়। পড়াশোনা , নাচ গান , খেলাধূলা কোথাও ফোকাস করতে পারে না। এটেনশন স্প্যান খুবই কম থাকে। ইন্সট্রাকশন ফলো করতে পারে না। কোনো কাজ কমপ্লিট করতে পারে না। খুব ভুলো মন। কল্পনার জগতে থাকতে ভালোবাসে।

      2. হাইপারএক্টিভ-ইমপাল্সিভ 
এরা এতটাই চঞ্চল হয় যে সারাদিন ছুটতে থাকে। এক মিনিটও  কোথাও স্থির হয়ে বসতে পারে না। চোট আঘাতের পরোয়া করে না। উচ্চতার ভয় নেই। জিনিস পত্র ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলে। এক কথায় ডেস্ট্রাক্টীভ। অনর্গল কথা বলতে থাকে, বড়োদের কথা ও কাজে বাধা দেয়। বড়োদের নির্দেশ শোনা বা বোঝার ক্ষমতা থাকে না।

      3. কম্বাইন্ড - উপরের দুটির মিলিত রূপ।


কী কারণে বাচ্চারা এডিএইচডি তে আক্রান্ত হয়?


মূল কারন জেনেটিক বা বংশগত হলেও , বিভিন্ন সময়ে করা নানা গবেষণায় আরও কিছু সম্ভাব্য কারণ বা ফ্যাক্টর সামনে এসেছে। পরিবেশ গত কিছু ফ্যাক্টরস যেমন - মস্তিস্কের কোনো চোট বা আঘাত, গর্ভাবস্থায় রক্তে সিসার (লেড) বিষক্রিয়া , নেশাসক্তি (ধুম্রপান ও মদ্যপান ) , প্রিম্যাচিওর ডেলিভারী ও লো বার্থ ওয়েট। গর্ভকালিন সময়ে অতিরিক্ত ' স্ক্রীন টাইম ' ( মোবাইল , ল্যাপটপ, টিভি ) এক্সপোজারকে ও অনেকে দায়ী করেন। তাছাড়া মা - বাবার ব্যাক্তিগত  সম্পর্কে  পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব ও পরিবারের বিশৃঙ্খল পরিবেশ, বাচ্চার  মধ্যে এডিএইচডি র লক্ষণগুলি বাড়িয়ে দিতে পারে। 


ADHD এর লক্ষণ 


● অমনোযোগী। এটেনশন স্প্যান কম থাকায় কোনো কিছুতে ঠিক ভাবে ফোকাস করতে পারে না।

● ইমপাল্সিভ।  না ভেবে কাজ করে।

● কল্পনার জগতে থাকে। ভুলো মন। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস হারিয়ে ফেলে।

● অত্যধিক মানসিক ও শারীরিক চঞ্চলতা। সব সময় একশন মোডে চলে। অল্প সময়ের জন্যও এক জায়গায়  স্থির থাকতে পারে না।

● কোনো কথা শোনা বা বোঝার মতো মানসিক স্থিরতা নেই। ইন্সট্রাকশন ফলো করতে পারে না।

● কোনো কাজ শুরু করলেও শেষ করতে পারে না। 

● সারাক্ষণ অনর্গল কথা বলে। অন্যের কথা শোনার আগ্রহ কম, কথার মাঝে কথা বলে। 

● অতি মাত্রায় আবেগী। জিনিস পত্র ভাংচুর করে , ছুড়ে ফেলে। আচরণে অসংলগ্নতা ও সময়ে হিংস্রতাও দেখা যায়।

● গ্রুপ এক্টীভিটি তে অসুবিধা হয়। সমবয়সী অন্য বাচ্চাদের সাথে সহজে মিশতে পারে না। 

● কোনো কিছুতে বেশীক্ষণ আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না। সহজেই বোর ফীল করে। 


● একটু বড়ো বাচ্চাদের মধ্যে মূড সুইঙ ও এঞ্জাইটি র লক্ষণ থাকতে পারে।

এই লক্ষণ গুলি সাধারণত 3 থেকে 6 বছর বয়সের মধ্যেই প্রকাশ পেতে শুরু করে। ভারতে এই মুহুর্তে স্কুল পড়ুয়া শিশুদের ( 3 থেকে 7 বছর বয়সী ) মধ্যে আনুমানিক সাত শতাংশ শিশু এই রোগে আক্রান্ত। 

এটেনশন ডেফিসিট হাইপার এক্টিভিটি ডিজঅর্ডার এর চিকিৎসা


সঠিক সময়ে রোগ শনাক্তকরণ ও উপযুক্ত চিকিৎসায় রোগ লক্ষণ গুলি প্রশমিত হয় এবং সঠিক দিশায় চিকিৎসা চলতে থাকলে এক সময় সম্পূর্ণ রূপে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই ধরণের রোগ নির্ণয়ে সাধারণত কোনো ল্যাবরেটরি টেস্ট এর প্রয়োজন হয় না। খুব বেশী প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসক সিটি স্ক্যান বা ইইজি করাতে পারেন। অন্যান্য সম্ভাব্যতা কে রুল আউট করার জন্য চোখ ও কানের ও পরীক্ষা করাতে পারেন। সাধারণত একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পরিকল্পনা করে থাকেন। American Psychiatric Association এর ডায়াগ্নস্টিক ও স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল ( DMS-5 ) নিরূপিত " প্রশ্নত্তোরের " ভিত্তিতে পাওয়া স্কোর অনুযায়ী রোগ শনাক্ত করা হয়। চিকিৎসক এক্ষেত্রে , বাচ্চা , বাচ্চার বাবা-মা,  পরিবারের অন্যান্য সদস্য , কেয়ার টেকার ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। 




শুধুমাত্র ওষুধ ব্যবহার করে ADHD সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এই রোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে 
বিহেভিয়রাল থেরাপী
• কাউন্সেলিং 
• স্পেসাল এডুকেশনাল সাপোর্ট
• স্কিল ট্রেনিং
• প্যারেন্ট ট্রেনিং এন্ড এওয়ার্নেস 
• এবং বিশেষ প্রয়োজনে নির্দিষ্ট  কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। 

বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে , শুধুমাত্র মেডিকেল ইন্টারভেনশন এই ক্ষেত্রে কার্যকরী নয়। সম্মিলিত ভাবে, মেডিকেল, সাইকলজিক্যাল , বিহেভিয়রাল , কাউন্সেলিঙ এই রোগ সারাতে বিশেষ ফলপ্রসূ হতে পারে। 

স্বীকৃত ওষুধ 


FDA কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ কে এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এতে মূলত দুই ধরণের ওষুধ রয়েছে - স্টিম্যুলেন্টস ও নন-স্টিম্যুলেন্টস। 

☆Methylphenidate    একমাত্র স্টিম্যুলেন্ট জাতীয় মেডিসিন যা আমাদের এখানে পাওয়া যায়।

( ☆ Indian Journal of Psychiatry )

যেহেতু এই ক্ষেত্রে 3 থেকে 6 বছর বয়সী ছোটো বাচ্চাদের মধ্যে রোগলক্ষণ গুলি প্রথম প্রকাশ পায় , তাই চিকিৎসক কে ওষুধ ব্যবহারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এই ওষুধ গুলি লক্ষণ প্রশমিত করতে এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য অসুবিধা দূর করতে যেমন কার্যকরী ভূমিকা নেয়, পাশাপাশি এদের রয়েছে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও ( সাইড এফ্যাক্ট ) ।

আমেরিকান এসোসিয়েশন অব প্যাডিয়াট্রিক্স   তাঁদের জারি করা এক নির্দেশিকায় ছয় (6) বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে, ওষুধ শুরু করার পূর্বে ফাস্ট লাইন ট্রিটমেন্ট হিসেবে ' প্যারেন্টস ট্রেনিং ইন বিহ্যেভিয়র ম্যানেজমেন্ট ' এর সুপারিশ করেছে। 



সাধারণত মৃদু ও সামান্য লক্ষণ থাকলে ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। তবুও চিকিৎসার প্রয়োজনে যদি মেডিসিন শুরু করতেই হয়, তবে  চিকিৎসক এর সাথে আলোচনা করে ওষুধের ডোজ, কতদিন খাওয়া তে হবে, সম্ভাব্য সাইড এফ্যাক্ট , কোন ধরণের খাবার বাদ দিতে হবে ইত্যাদি ভালো ভাবে জেনে নেবেন। 


ADHD বাচ্চার খাবার ( এডিএইচডি ডায়েট ) 


লো সুগার এবং কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট 

চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খাবারে অত্যধিক চিনি, ময়দা , আটা, সুজি , ভাত , মধু জাতীয় সরল শর্করা ( সিম্পল কার্বস ) এর ব্যবহার কম করতে হবে। পরিবর্তে ব্রাউন রাইস, ডালিয়া , বিভিন্ন টাটকা ফলমূল ও শাকসব্জি রাখতে হবে খাবার মেনুতে। অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার এডিএইচডি লক্ষণ গুলি বাড়িয়ে দিতে পারে।

ওমেগা 3 ফ্যটি এসিড 

সুষম খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি , লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আপনার শিশু খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা 3 পায়। গবেষণায় দেখা গেছে ওমেগা 3 মস্তিস্কের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও স্নায়ুর বিকাশে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। বিভিন্ন প্রকার বাদামে ও তৈলাক্ত মাছে ওমেগা 3 পাওয়া যায়। FDA এডিএইচডি র চিকিৎসায় এক বিশেষ ধরণের ওমেগা কম্পাউন্ড 'ভায়ারিন' কে মান্যতা দিয়েছে।

● হাই কোয়ালিটি প্রোটিন 

শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রোটিন একটি অপরিহার্য উপাদান । মাছ, মাংস , ডিম , বিভিন্ন রকমের ডাল জাতীয় খাদ্যে হাই কোয়ালিটি প্রোটিন পাওয়া যায়। জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে প্রোটিন সমৃদ্ধ " হেল্দি স্ন্যাকিং " এ বাচ্চাদের উৎসাহিত করুন। 

● মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস 

গবেষণায় দেখা গেছে ADHD র চিকিৎসাতে জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়ামের এর মতো মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস সদর্থক ভূমিকা নিতে পারে। জিঙ্ক ডোপামিন হরমোণ নি:সরণ কে প্রভাবিত করে ও মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ু কে শান্ত রাখে এবং অতি সক্রিয়তা প্রশমিত করে। জিঙ্ক বেশী মাত্রায় পাওয়া যায় রেড মীট, পোল্ট্রি ও ডেয়ারী জাতীয় খাবারে। আর ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে রয়েছে মরিঙ্গা , কুমড়োর বীজে, বিভিন্ন রকমের বাদাম ও চিয়া সীড, সয় মিল্ক , ওটস ইত্যাদি তে।

আইসক্রিম , মিষ্টি , চকোলেট , ক্যান্ডি ও পেকেট জাত খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই ধরণের খাবারে ব্যবহৃত কৃত্রিম রঙ , নানা প্রিজার্ভেটিব ও অতিরিক্ত চিনি এডিএইচডি  র রোগীর চিকিৎসার পথে জটিলতা সৃস্টি করতে পারে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, এই শিশুদের কিছু বিশেষ খাবারের প্রতি এলার্জি বা ফুড সেন্সিটিভিটি থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে বা উপযুক্ত ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ অনুযায়ী ' ডায়েট প্ল্যান ' তৈরী করুন। 


লাইফস্টাইল 

সুষম খাদ্য গ্রহণের পাশে শিশুকে নিয়মিত শরীরচর্চায় উৎসাহিত করুন। এক্সেরসাইজ শুধু ওদের শরীরের অতিরিক্ত এনার্জিকে ই খরচ করে না , শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কেননা এই ধরণের বাচ্চাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। কিছু গবেষক তাদের গবেষণায় এডিএইচডি র সাথে ওবেসিটি বা স্থূলত্বের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। দেখা গেছে দেহের অতিরিক্ত ওজন এডিএইচডি র সিম্পটম গুলিকে জটিল করে তুলতে পারে। ওদেরকে অযথা  বকা ঝকা করবেন না। প্রয়োজনে একই কথা বারবার বুঝিয়ে বলুন। ছোটো ছোটো কাজ করতে উৎসাহ দিন , করতে পারলে অবশ্যই রিওয়ার্ড দেবেন। ওদের এমনিতেই প্রচুর এনার্জি থাকে , এই এনার্জি কে সৃজনশীল কাজে ব্যবহার করুন। সার্চ করলে এমন অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন। ওর পড়াশোনার উন্নতি করতে ও আচরণগত ত্রুটি দূর করতে একজন স্পেশাল এডুকেটর এর সাহায্য নিতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত  মেডিটেশন ও মাইন্ডফুলনেস অভ্যাসে এডিএইচডি আক্রান্ত বাচ্চারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। 

এছাড়াও  কিছু গবেষক , ADHD র সাথে আমাদের অন্ত্রের ( গাট হেল্থ ) যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। দেখা গেছে অন্ত্রে বসবাসকারী উপকারী ব্যাকটেরিয়া কুলের বৈচিত্রময় উপস্থিতি ও সক্রিয়তার উপরে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর সামগ্রিক সুস্থতা এবং ক্রিয়াশীলতা অনেকাংশেই নির্ভর করে। 






পরিশেষে এটুকুই বলবো এডিএইচডি শিশুরাও অন্য শিশুদের মতো সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে ও জীবনে সফল হতে পারে। সুতরাং হতাশ না হয়ে ওর পাশে দাঁড়ান। সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা ও সবার সম্মিলিত প্রয়াসে ও ধীরে ধীরে এই অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবে। একটা কথা মনে রাখবেন, এদের এনার্জি লেভেল সম বয়সী অন্য বাচ্চাদের তুলনায় অনেক বেশী, শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজণ এমন খেলাধূলা  বা এক্টীভিটি তে উৎসাহিত করুন। ওদের কল্পনা শক্তিও খুব প্রখর হয়। ক্রিয়েটিভ কিছু তে এনগেজ করুন। অনেকেই মনে করেন ওদের IQ কম থাকে, কিন্তু এটা সর্বাংশে সত্যি নয়। ওদের মধ্যে অনেকের আই কিয়ু এভারেজ থেকে বেশী হয়। যতদূর জানা যায় আইনস্টাইন  নিজেও এডিএইচডি আক্রান্ত ছিলেন !! আমেরিকার সেলিব্রিটি জিমন্যাস্ট সাইমন বিলস, হলিয়ুড তারকা  এমা ওয়াটসন, উইল স্মিথ, জনি ডেপ  এঁরা সবাই ADHD সুপার হিরো। আপনার শিশুর সঠিক যত্ন নিন, একদিন ওর জন্য আপনি নিশ্চই গর্ববোধ করবেন।


কৃতজ্ঞতা স্বীকার :

CDC 
Chadd 
FDA
Indian Journal of Psychiatry 
WebMD
Healthline.com
Mayoclinic.org 
Nutshell Animations ( video )


Disclaimer : This article is for informational  purpose only , should not be taken as an  alternative of a standard medical advice. 















মন্তব্যসমূহ

  1. দারুণ লিখেছেন। বর্তমান সময়ের একটা জ্বলন্ত সমস্যা।আশা করি অভিভাবকেরা উপকৃত হবেন।👌👌🌹

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ডিপ্রেশন কে হালকা ভাবে নিয়ো না

চাকরি হারানোর ভয় কি আপনাকে রাত দিন তাড়া করে বেড়াচ্ছে?

2023 এ সুস্থ থাকতে ও অতিমারী থেকে বাঁচতে আজই শিখে নাও ডিপ ব্রীদিং