ছোটো শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না এবার ওমিক্রন BF .7 এর সংক্রমণ থেকে

 এবারের বছর বিদায়ের এই লগ্নে দাড়িয়ে আমরা সবাই আবারো একবার করোনার দাপটে কিছুটা হলেও দিশেহারা। আলোচনার বিষয় এখন একটা ই , কী হতে যাচ্ছে আগামী তে আমাদের ভবিষ্যত? চীনের মতো আমাদের এখানেও কি পরিস্থিতি এতটা ভয়ংকর হতে চলেছে? তবে কি আবারও  লক ডাউনের পথে  এগুচ্ছে দেশ ? নানা জনের নানা মত। আশঙ্কা কিন্তু একটা থেকেই যাচ্ছে। এতো সব কিছুর মধ্যেও, যে বিষয়ে  প্রশ্ন টা সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা হল , বাচ্চারাও কি ওমিক্রন BF.7  এ আক্রান্ত হতে পারে?Can small kids be infected by Omicron BF.7?


BF.7 in children , signs and symptoms

এবারের কোরোনার এই বিশেষ রূপে আগমন কিন্তু কিছুটা চিন্তার বৈকী। বিশেষজ্ঞরা যদিও অভয় দিচ্ছেন যে ওমিক্রন তার পূর্ববর্তী সংস্করণ ডেল্টা র মতো এতো টা বিদ্ধংসী নয়, মৃত্যুর হার যথেষ্ট কম এখানে। কিন্তু ওমিক্রনে র সাব- ভ্যারিয়েন্ট BF.7 কিন্তু ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে। এর পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। চলো দেখে নেয়া যাক করণ গুলি কী তা এক নজরে -

● এই ভাইরাস টি অতি মাত্রায় সংক্রামক। সর্বাধিক আঠারো জন ব্যক্তিকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা রাখে। ফলে সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

● ইনকিউবেশন পিরিয়ড কম হওয়ায় অনেক সময় RT-PCR টেস্ট এ ধরা পরে না।

● জেনেটিক স্ট্রাক্চারে কিছু পরিবর্তন করার ফলে এখন সে সহজেই আমাদের ইম্যুনিটি কে ফাঁকি দিতে সক্ষম।

● আগে যারা কোভিডে  সংক্রমিত হয়েছেন সেরকম  ব্যাক্তি বা যাদের টিকাকরণ হয়েছে তারাও সংক্রমিত হতে পারেন।

● এবারের সংক্রমণে গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের পাশাপাশি শিশুরাও  আক্রান্ত হচ্ছে। ওমিক্রন BF .7 এর আক্রমণের শিকার হচ্ছে শিশুরা। Small kids are now being infected by Omicron  BF.7

পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতায়  দেখেছি কোভিড শিশুদের আক্রমণ করে না আর করলেও পরিস্থিতি খুব একটা জটিল আকার ধারণ করে না। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে শিশুরাও সমান ভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। যেহেতু এখনো পর্যন্ত শিশুদের কোভিড টিকাকরণ হয় নি, এবং শিশুদের সংক্রমণ হলে তা কতটুকু জটিল হতে পারে সে বিষয়ে এখনো আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য নেই। সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সচেতনতা ও যথাযত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কোভিডের থাবা থেকে শিশুদের রক্ষা করতে পারে। 

ওমিক্রন BF.7 সংক্রমণে বাচ্চাদের মধ্যে কি কি উপসর্গ দেখা দিতে পারে? Omicron BF.7 symptoms in children :


বড়োদের মত বাচ্চাদের মধ্যেও সবার এক ই রকমের লক্ষণ দেখা না ও যেতে পারে। ব্যাক্তি বিশেষে উপসর্গগুলি ভিন্ন হতে পারে। আবার কোনো বাচ্চা এসিমটোমিক ও থাকতে পারে। ওমিক্রন এর মূল উপসর্গ গুলি হল -

1. Upper respiratory tract infection 

2. জ্বর 

3. শুষ্ক কাশি  ( dry cough)। বাচ্চাদের মধ্যে হঠাৎ ক্রুপ কাশির মতো কাশি র দমক দেখা দিতে পারে।

4. গলা ব্যথা, ঢোক গিলতে কষ্ট। 

5. নাক দিয়ে জল পরা , নাক বন্ধ, কখনো হাঁচি।

6. মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি ও দুর্বলতা ।

7. পেট ব্যথা। বমি, ডাইরিয়া ।

8. হাতে পায়ে চুলকুনি বা রেশ বেরুতে পারে ( Covid rash )।

9. কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোভিড আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ' মাল্টি অর্গান ইন্ফ্ল্যামেশন ' এর মতো জটিল পরিস্থিতি তৈরী হয়। 

এই জটিল পরিস্থিতিতে, ঘাবড়ে গেলে চলবে না। আমাদের আরও সতর্ক , সজাগ হতে হবে। সরকারী ভাবে জারি করা নির্দেশ গুলি (স্বাস্থ্যবিধি) মেনে চলতে হবে। আত্ম বিশ্বাস জরুরী কিন্তু এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বিপদ ডেকে আনতে পারে। বাড়িতে ছোটো বাচ্চা থাকলে তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাদের ও জানার অধিকার আছে বর্তমান পরিস্থিতির সম্পর্কে। আমাদের উচিৎ, তাদেরকে সহজ করে বিষয় টা বুঝিয়ে বলা, সচেতন করা। ' কোভিড আচরণ বিধি ' মেনে চলতে উৎসাহিত করা। সঠিক খাদ্যাভ্যাস , পর্যাপ্ত ঘুম , নিয়মিত শরীরচর্চা ও মেডিটেশন   অভ্যাস করলে বড়দের মতো ছোটদের দেহেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। 

বাচ্চাদের মধ্যে কোভিডের উপসর্গ দেখা দিলে ঘাবড়ে না গিয়ে শিশুর উপযুক্ত যত্ন নিতে হবে। সুষম খাবার ও প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হতে পারে। এই সময়ে বাচ্চাদের  ক্রিয়েটিভ কোনো কাজে যুক্ত করতে পারলে, ওদের ঘরবন্দী থাকার কষ্টটা লাঘব হয়, মনে উৎসাহ ও পজিটিভিটি বজায় থাকে। ওমিক্রনের  ক্ষেত্রে দেখা গেছে , সাধারণত ইনফেকশন এর কিছুদিনের মধ্যে শিশুরা নিজের থেকেই সেরে ওঠে। তবুও সতর্ক থাকতে হবে , কেননা কারো কারো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে, সেক্ষেত্রে দেরী না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিৎ।

🏥 শিশুর মধ্যে যে লক্ষণ গুলি দেখলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে / some serious signs in children which need immediate medical attention  - 

দীর্ঘ ও কষ্টকর কাসি। শ্বাসকষ্ট।

● বুকে চাপ চাপ ব্যথা।

● অত্যধিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা।

● ডাকলে সাড়া না দেয়া। কনফিউশন

● ঠোঁট , জিভ নীলচে হয়ে যাওয়া অথবা শরীর ফেকাসে হয়ে গেলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।










মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ডিপ্রেশন কে হালকা ভাবে নিয়ো না

চাকরি হারানোর ভয় কি আপনাকে রাত দিন তাড়া করে বেড়াচ্ছে?

2023 এ সুস্থ থাকতে ও অতিমারী থেকে বাঁচতে আজই শিখে নাও ডিপ ব্রীদিং